Home বিনোদন শিঙাড়া বিক্রেতার মেয়ে আজ মিউজিক সেনসেশন

শিঙাড়া বিক্রেতার মেয়ে আজ মিউজিক সেনসেশন

by Amir Shohel

সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্ম হয়নি তাঁর। বরং অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই কেটেছে ছোটবেলা। বন্ধুদের হাসি তামাশার ও কারন হয়েছে। একেবারে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের অত্যন্ত সাধারণ একটি মেয়ে।আর এখন তিনি সারা ভারতে তুমুল জনপ্রিয়। আজকের মিউজিক সেনসেশন। বলছি নেহা কক্করের কথা।যার মায়াঁবী কন্ঠের প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ খুজে পাওয়া বিড়ল।নেহা গানের সাথে সাথে নাচেও সমান পারদর্শী।

নেহা কক্করের জন্ম ১৯৮৮ সালে ৬ জুন উত্তরপ্রদেশের ঋষিকেশে।নেহা মাত্র ৪ বছর বয়স থেকে গান গাইতে শুরু করেন ।প্লেব্যাক সিঙ্গার সনু কক্করের ছোট বোন তিনি। পাশাপাশি এক ভাই গায়ক টনি কক্কর। তাঁদের পরিবারে সঙ্গীত চর্চার একটা রেওয়াজ ছিল। সে কারণে ছোট থেকে তিন ভাইবোনের মধ্যেও সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ গড়ে ওঠে।সংসারে প্রচুর অভাব-অনটন থাকায় ঋষিকেশে এক কামরার ঘরে বাবা মা ভাই বোন সবাই মিলে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রামে ওই ভাড়া বাড়ির ছবিও শেয়ার করেছেন নেহা।

নেহার বাবা ছিলেন শিঙাড়া বিক্রেতা। সনু কক্কর যে কলেজে পড়তেন, তার গেটের বাইরেই শিঙাড়া নিয়ে বসতেন। শুধু শিঙাড়া বিক্রি করে এত বড় সংসার সামলানো একার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। ছোট হলেও বাবার সমস্যাটা বেশ ভাল করেই বুঝতেন তিন ভাইবোন। তাই যে বয়সে অন্যান্য বাচ্চারা বাবা-মার ছত্রছায়ায় বড় হয়, ছোটদের আবদার মেনে খাবার, খেলনা কিনে এনে দেন, সেই ছোট বয়স থেকেই উপার্জন করতে শুরু করেন তাঁরা। তিন ভাইবোনই উৎসবের সময় মন্দিরে ভজন গাইতেন। পরিবর্তে তাঁরা ৫০ টাকা করে পেতেন। বাড়ি ফিরে সেই টাকা তাঁরা মায়ের হাতে তুলে দিতেন।

ঋষিকেশ থেকে দিল্লি চলে আসার পর সেখানে পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন।নেহার গায়িকা হয়ে ওঠার জার্নি শুরু হয়েছিল একাদশ শ্রেণি থেকে। তখন ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ২-এর প্রতিযোগী বাছাই চলছিল খবর পেয়ে সেটে চলে যান নেহা,তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান বিচারকেরা। সিজন ২-এর প্রতিযোগী হিসেবেও নির্বাচিত হয়ে যান।কিন্তু শেষ অব্দি ৮ নম্বর হয়েই বিদায় নিতে হয়ে তাকে।

২০০৮ সালে নেহা দ্য রকস্টার নামে তাঁর প্রথম গানের অ্যালবাম মুক্তি পায়,কিন্তু ততটা সফল হতে পারেননি তিনি,২০১৩ সালে প্রথম প্লেব্যাক ডেবিউ করেন ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো ছবির একটি গানে,তখন থেকেই পরিচিতি টা বাড়ছিলো। ২০১৪ সালে তাঁর গান সানি সানি ভীষণ দর্শকপ্রিয়তা পায়।ব্যাচ আর পেছনে ফেরে তাকাতে হয়নি নেহাকে।একের পর এক হিট গান দিয়ে আসছে, ছুঁয়ে দিয়েছে ভক্তকূলের মন।

কথায় আছে কেউ যদি তার লক্ষ্যে স্হির থাকে ভাগ্যদেবী তার সহায় হয়।যে ইন্ডিয়ান আইডল থেকে তাঁর উত্থান, সেই জনপ্রিয় সঙ্গীত অনুষ্ঠানের বিচারকের আসনে বসেছেন বেশ কয়েকবার। এমনকি যে ঋষিকেশে একটা ছোট এক কামরার ভাড়া বাড়িতে ছোটবেলা কাটিয়েছেন, আজ সেখানেই নিজের বিলাসবহুল বাংলো কিনে ফেলেছেন নেহা।২০১৮-১৯ সালে সবচেয়ে বেশি স্টেজ পারফর্ম করা তালিকায় ছিলো নেহা।তিন ভাই বোন তাদের নিজস্ব আয়োজনে গান ও গেয়েছেন,যার টাইটেল স্টোরি অফ কাক্কর ।সেই গানে তাদের ছোটবেলার সংগ্রাম শুরু করে এখন অব্দি জীবন যাত্রার বর্ননা করেছেন।২০২২ সালে কাক্কর ষ্টোরির ৩য় পার্ট রিলিজ হবে।

ব্যক্তিগত জীবনেও খুবই আবেগপ্রবণ নেহা। ২০১৪ সাল থেকে হিন্দি টেলিভিশন অভিনেতা হিমাংশ কোলির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক ২০১৮ সালে ভেঙে যায়। এর পর খুব ভেঙে পড়েছিলেন।কিন্তু কথায় আছে জীবনে যদি সঠিক মানুষ আসে আর ভালবেসে আগলে রাখে তবে প্রাক্তনকেও ভোলা সম্বভ।তাইতো গেলেো বছর নেহা ভালবেসে বয়সে ছয় বছরের ছোট রোহনপ্রীত সিংকে বিয়ে করেন খুব জমকালো ভাবে।

গান গেয়ে বিখ্যাত হওয়ার পাশাপাশি পেয়েছেন একাধিক পুরুষ্কার ও সম্মাননা। ২০১৯ সালে কক্কর ৪.২ বিলিয়ন ভিউ সহ ইউটিউবে সর্বাধিক দেখা শিল্পীদের তালিকাভুক্ত হয়েছিল। করেছেন আরেক রেকর্ড ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তিনি প্রথম ভারতীয় গায়িকা যিনি ইউ টিউবে ডায়মন্ড বাটন পেয়ে পেয়েছিলেন।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like