জন্মের পরই শিশুটিকে পৌনে এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু শরীরে কোনো স্পন্দন না পেয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে মৃত্যুসনদ হাতে শিশুটির বাবা মো. ইয়াসিন তাকে রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে নিয়ে যান।
নবজাতকটির জন্য যখন কবর খোড়া হচ্ছিল, তখন হঠাৎ করেই করে কেঁদে ওঠে সে। এরপর শিশুটিকে পুনরায় ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন বাবা ইয়াসিন। পরে শিশুটিকে হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা গত শুক্রবারের।
এরপর শিশুটিকে সুস্থ করে তুলতে শুরু হয় ঢামেক কর্তৃপক্ষের নানাবিধ প্রচেষ্টা। কিন্তু শেষমেষ বাঁচানো গেলো না তাকে। জন্মের ছয় দিনের মাথায় ২১ অক্টোবর বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নবজাতকটি ২৬ সপ্তাহ গর্ভে থাকার পর জন্ম নিয়েছিল। ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও শিশুটির বাবা মো. ইয়াসিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মো. ইয়াসিন বলেন, ‘কবরস্থান থেকে হাসপাতালে আনার পর আমার আম্মুর (নবজাতক) অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেয়েটি মারা যায়। কী ভাগ্য আমার, এক মেয়েকে হাসপাতাল থেকে দুবার কবরস্থানে নিয়ে যাচ্ছি। আশা দেখলাম, আবার আশা ভেঙে গেল। কবর থেকে বেঁচে ফেরা মেয়ে আমার মারা গেল।’
এর আগে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম নাসিরউদ্দিন বলেলেন, ‘গত শুক্রবার ভোরে ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ইয়াসিনের স্ত্রী শাহিনুর বেগম (২৭) একটি মেয়ে শিশুর জন্ম দেন। পরে তাকে প্রায় এক ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কিন্তু কোনো স্পন্দন ছিল না। সে সময় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরে আবার ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।’
নবজাতক ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক মনীষা ব্যানার্জি বলেন, ‘নবজাতকের বেঁচে যাওয়া যেমন একটি মিরাকল, তেমনি তাকে বাঁচিয়ে রাখাও মিরাকল। বাংলাদেশে ২৮ সপ্তাহের নিচে কোনো শিশু ভূমিষ্ঠ হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। আর এই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে ২৬ সপ্তাহে। তাকে বাঁচিয়ে রাখার সব রকম চেষ্টা করেছেন চিকিৎসকেরা। এ ধরনের শিশুদের ক্ষেত্রে যেকোনো সময় শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে চলে যায়।’
আরও পড়ুন: দাফনের আগ মুহূর্তে নড়ে উঠল শিশুটি
ভয়েস টিভি/এসএফ