Home বিশ্ব বিটা সামাতি: আফ্রিকার অজানা এক সভ্যতা

বিটা সামাতি: আফ্রিকার অজানা এক সভ্যতা

by Newsroom

মানব সভ্যতা কবে শুরু হয়েছিলো, প্রথম যাত্রা কোন স্থানে এখনো তার উত্তর খুঁজে ফিরছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। তাইতো যুগে যুগে আবিস্কার হচ্ছে বিভিন্ন সভ্যতার। এসবের মধ্যে কয়েকটি সভ্যতা নজর কেড়েছে বিশ্ববাসীর। এমনি এক সভ্যতার নাম ‘বিটা সামাতি’। যার নিদর্শন মিলেছে উত্তর ইথিওপিয়ায়।

গবেষকরা বলছেন, যিশুর জন্মের আশি বছর আগে পূর্ব আফ্রিকাতে যাত্রা শুরু হয় আকসুম সভ্যতার। প্রায় ৮২৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গোটা অঞ্চল জুড়ে ছিলো এই সভ্যতা। সেসময় রোমের সঙ্গেও বাণিজ্য করতো আকসুমরা। এমনকি, চীন ও পারস্যের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল।

আকসুম সভ্যতার প্রধান শহরের নামও আকসুম। তবে কিভাবে এই সভ্যতা গড়ে উঠে তা আজও স্পষ্ট নয়। গবেষকরা মনে করছেন, আশপাশের কোনো জনপদ থেকেই উত্তর ইথিয়োপিয়ায় গড়ে ওঠে আকসুম সভ্যতা।

সেই জনপদের সন্ধানেই জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা অনুসন্ধান শুরু করেন উত্তর ইথিওপিয়ার ইয়েহা অঞ্চলে। আর পেয়ে যান আরো পুরানো এক সভ্যতার। যার নাম বিটা সামাতি। স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ ‘দর্শকদের বাড়ি’।

বিটা সামাতিতে প্রত্নতত্ত্ববিদরা খুঁজে পান পাথরের সারি সারে দেয়াল। গবেষকদের দাবি, এটা গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা হলেও পশ্চিমা দুনিয়া এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানে না। রেডিওকার্বন পরীক্ষায় জানা যায়, বিটা সামাতির সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৭৭১ থেকে ৬৪৫ পর্যন্ত। আর আকসুম সভ্যতা গড়ে ওঠার পরও বিটা সামাতির অস্থিত্ব ছিল।

ইয়েহা অঞ্চলে ব্যাপক অনুসন্ধানে গবেষকরা খুজে পান, বিটা সামাতিতে অনেক ছোট ছোট বাড়ি ছিলো। পাশাপাশি বড় বাড়িরও খোঁজ মিলেছে। যেগুলোকে ‘বাসিলিকা’ বলছেন গবেষকরা। এসব ভবন আদালত বা অন্য প্রশাসনিক দফতর হিসেবে ব্যবহার হতো।

বর্তমান ইয়েমেনে আগে ছিল সাবা সাম্রাজ্য। চতুর্থ শতাব্দিতে সেখানকার রাজা আকসুম সভ্যতার মানুষদের খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত করেন। তখন এসব বাসিলিকা পরিনত করা হয় গির্জায়।

এই সভ্যতায় তামার তৈরি রিংও পাওয়া গেছে। এসব লাগানো হতো ষাঁড়ের শিংয়ে। এগুলো রোম থেকে আনা হতো বলে মনে করছেন গবেষকরা। এছাড়া মদ সংরক্ষণের বোতলও পাওয়া যায়। এসব বোতল আসতো জর্ডন থেকে।

বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায়, আশপাশের অন্য সভ্যতার সঙ্গেও বাণিজ্য হতো বিটা সামাতিদের। এখনো ইয়েহা অঞ্চলে অনুসন্ধান চলছে। প্রায় ১৪০০ বছর টিকে থাকা এই সভ্যতা থেকে চমকে দেয়ার মতো আরো কি কি তথ্য পাওয়া যায়, তা দেখার অপেক্ষায় বিশ্ববাসী।

লেখক : ফেরদৌস মামুন, সাংবাদিক

You may also like