প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে ১১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা মূল্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার ক্রয় করছে নেপাল। কর্ণফুলী ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড বা কাফকো থেকে বাজার মূল্যে সার ক্রয় করে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) নেপালের কৃষিসামগ্রী কোম্পানি লিমিটেডের (কেএসসিএল) কাছে ওই সার হস্তান্তর করবে।
ঢাকায় নেপালের রাষ্ট্রদূত বংশীধর মিশ্র আজ সোমবার সন্ধ্যায় এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নেপালে এ বছর সারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ১ সেপ্টেম্বর নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন সার সহায়তা হিসেবে চান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নেপালের প্রধানমন্ত্রীর ওই অনুরোধ অনুযায়ী সার সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন। ওই সিদ্ধান্তই ১৭ ডিসেম্বর চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে কার্যকর হতে হচ্ছে।
সাধারণত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর হয়ে তৃতীয় দেশ থেকে সার আমদানি করে নিয়ে যায় নেপাল। এবার হিমালয়বেষ্টিত দেশটিতে সারের সংকট এতটাই বেড়েছে যে, সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ থেকে সার নেয়াটাই বিকল্প মনে করছে দেশটি।
নেপালকে যে ইউরিয়া সার দেয়া হবে, তার প্রতি টনের মূল্য ২৬৩ ডলার। সেই হিসাবে সারের দাম হবে ১১১ কোটি ৭০ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা।
বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) নেপালের কৃষিসামগ্রী কোম্পানি লিমিটেড (কেএসসিএল) চুক্তিটি সই করবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, শুরুতে দুই দেশের আলোচনা অনুযায়ী ফেরতযোগ্য ঋণের আওতায় নেপালের কাছে বাংলাদেশের সার বিক্রির বিষয়ে চুক্তি হয়। ওই ঋণ পরিশোধের জন্য সময় ধরা হয়েছিল ১৮ মাস। পরে চুক্তির শর্ত শিথিল করা হয়। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার কাফকো থেকে যে দামে সার কিনবে, নেপাল সেই টাকাই বাংলাদেশকে ফেরত দেবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যে চাহিদা, তা মেটাতে সার আমদানি করতে হয়। যেহেতু প্রতিবেশী নেপাল তাদের সংকটে সার চেয়েছে, তাই দেশটিকে ৫০ হাজার টন সার দেওয়া হচ্ছে। শুরুতে ফেরতযোগ্য ঋণ পরিশোধের আওতায় সার বিক্রির কথা ছিল। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, সার নেপালে পৌঁছানোর পর এর মূল্য পরিশোধ করবে নেপাল।
জানা গেছে, নেপালকে যে ইউরিয়া সার দেওয়া হবে, তার প্রতি টনের মূল্য ২৬৩ ডলার। সেই হিসাবে সারের দাম হবে ১১১ কোটি ৭০ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন-ভারতের মিত্র থেকে কেন শত্রু হলো নেপাল
ভয়েস টিভি/ডিএইচ