Home বিনোদন সিনেমা ‘দ্যা কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে উত্তাল ভারত

সিনেমা ‘দ্যা কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে উত্তাল ভারত

by Amir Shohel

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। বিবেক অগ্নিহোত্রী নির্মিত একটি সিনেমা। যে সিনেমার বিষয়বস্তু কাশ্মীর। কিন্তু খোদ কাশ্মীরের অধিকাংশ মানুষই রুষে উঠেছে সিনেমাটির বিরুদ্ধে। পুরো ভারতজুড়ে পক্ষে ও বিপক্ষে নানামত তৈরি হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় সিনেমাটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। সবাইকে এ সিনেমা দেখা থেকে বিরত থাকতে বলছেন তিনি। কিন্তু কি আছে এই সিনেমায়? কেন এ নিয়ে উত্তাল পুরো ভারত। জানাবো সে খবর…….

কাশ্মীর উপত্যকাবাসীর বড় অংশই বলছে- এটি একটি ‘উদ্দেশ্যমূলক ছবি’। এই ছবিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়কে স্থানীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা। তবে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিও ওই সিনেমার প্লটকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ হয়।

নব্বইয়ের দশকে হিন্দুদের গণহারে কাশ্মির ছাড়ার ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘দ্য কাশ্মির ফাইলস’। মুক্তির পর থেকেই সিনেমাপাড়া থেকে সোশাল মিডিয়ায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে এ সিনেমা। গত ১১ মার্চ ভারতের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য কাশ্মির ফাইলস’ ১৯৯০ সালের ওই সময়ের ঘটনাপ্রবাহকে একটি কাল্পনিক গল্পের মধ্য দিয়ে তুলে ধরতে চেয়েছে।

কাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানতে পারেন, তার বাবা-মায়ের দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার যে কথা তার দাদা এতদিন বলে এসেছেন, তা সত্য নয়। বরং তার কাশ্মিরের বাসিন্দা হিন্দু বাবা-মাকে খুন করেছে মুসলমান জঙ্গিরা।

একাধিক সমালোচকের কাছে এ সিনেমা ’পক্ষপাতদুষ্ট’ মনে হয়েছে। সিনেমাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একপক্ষ বলছে, কাশ্মীরের যে রক্তাক্ত ইতিহাসকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে এতদিন, সেই ঘটনাবলীর ওপর আলো ফেলেছে এ সিনেমা। আর অন্যপক্ষ বলছে, এই সিনেমা বস্তুনিষ্ঠতার ধার ধারেনি, বরং ইসলামভীতি উস্কে দিচ্ছে।

এসব আলোচনা-সমালোচনা চলার মধ্যেই বিজেপি সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। নরেন্দ্র মোদী সব সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ’উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার‘ চলছে এ সিনেমার বিরুদ্ধে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলো ওই সিনেমার ওপর ধার্য করে ছাড় দিয়েছে। মধ্য প্রদেশে পুলিশ সদস্যদের এক দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে সিনেমাটি দেখার জন্য।

নির্মাতা বিবেক অগ্নিহোত্রী এরইমধ্যে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন। দেখা করেছেন তার পক্ষে টুইট করা বলিউড তারকাদের সঙ্গেও। অক্ষয় কুমার, কঙ্গনা রানাউতের মত তারকারা বিজেপি সরকারকে বেশ সমর্থন দিচ্ছেন।

তবে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আহমেদ ওয়ানি বলেন, ‘কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিয়ে সিনেমা হয়েছে, ভালো কথা। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩৩ বছরে সন্ত্রাসবাদের শিকার কমবেশি ২০০ কাশ্মীরি পণ্ডিত। ২০১৬ সালে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিকে হত্যার পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক তরুণ-যুবক প্রাণ হারাল। সেই ঘটনা নিয়েও তো সিনেমা হতে পারে! রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়েই ওই ছবি তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান ওয়ানি।

একই মত উপত্যকায় পণ্ডিতদের স্বার্থ নিয়ে লড়াই করা কাশ্মীর পণ্ডিত সংঘর্ষ সমিতির। সংগঠনের সদস্য সঞ্জয় টিকুর কথায়, ‘কিছু লোক এই ছবি দেখিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়। তাদের অঙ্গুলিহেলনেই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।’

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like