যৌতুকলোভী স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন সইতে না পেরে চিরকুট লিখে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ। ঘটনাটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বন্দ মান্দাইল এলাকার।
গত ৭ ডিসেম্বর ওই এলাকার হাজী আমির হোসেনের বাড়ির তৃতীয় তলায় ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে এবং গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মিডফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফৌজিয়া আক্তার ঝুমুরের (৩০) সঙ্গে দেড় বছর আগে বন্দ মান্দাইল এলাকার মৃত আ. আজিজের ছেলে মো. আলমগীরের (৩২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়।
নিহতের বড় ভাই আফজাল হোসেন জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী আলমগীর প্রায়ই ঝুমুকে তার ভাইদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিত। দেড় বছরে ওই গৃহবধূ ভাইদের থেকে নিয়ে প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকাও দিয়েছে।
এরপরও কিছুদিন আগে নতুন করে ব্যবসার জন্য টাকা এনে দিতে ঝুমুরকে চাপ দেয় স্বামী আলমগীর। এতে ঝুমুর অস্বীকৃতি জানালে আলমগীরের পুরো পরিবার মিলে নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুমুর আত্মহত্যা করে। মরদেহ উদ্ধারের সময় ঝুমুরের ঘরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
চিরকুটে ঝুমুর শ্বশুর বাড়ির মানসিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তার মৃত্যুর জন্য শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে দায়ী করেছেন বলে জানান নিহতের ভাই।
নিহতের ছোট ভাই শাহীন জানান, প্রায়ই ঝুমুর ফোন করে কাঁদতো টাকার জন্য। আমরা এ পর্যন্ত ৭/৮ লাখ টাকা দিয়েছি। করোনায় কাজ ছিল না বলে এবার টাকা দিতে পারিনি। আর এর জন্য লাশ হতে হলো আমার বোনকে। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করে নিহতের স্বামী আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আমরা আদালতে পাঠিয়েছি।
ভয়েস টিভি/এসএফ/ডিএইচ