Home ধর্ম স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন হিন্দা-কসবা শাহী মসজিদ

স্থাপত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন হিন্দা-কসবা শাহী মসজিদ

by Amir Shohel

ইসলামী স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ। জয়পুরহাট শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের হিন্দা গ্রামে এ মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটির কাচ, চিনামাটির টুকরা ও মোজাইক করা দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন রকম নকশা যা মোগল স্থাপত্য শিল্পের অনুকরণে করা হয়েছে।

বাংলা ১৩৬৫ সালে বাগমারী পীর হিসাবে পরিচিত চিশতিয়া তরিকার অন্যতম পীর হযরত আব্দুল গফুর চিশতীর (রহ.) নির্দেশে মাওলানা আব্দুল খালেক চিশতি আমলে তারই তত্ত্বাবধানে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। হযরত আব্দুল কাদের নিজেই এর নকশা তৈরি ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

মসজিদের জন্য প্রসিদ্ধ বাংলাদেশ।দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য বলতে অধিকাংশই মসজিদ। দেশের আনাচে-কানাচে রয়েছে বিভিন্ন নান্দনিক মসজিদ। জয়পুরহাট জেলায় অবস্থিত ‘হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদতেমনই একটি নান্দনিক মসজিদ যা বাংলাদেশের ইসলামী স্থাপত্য শিল্পের একটি অন্যতম নিদর্শন।

মসজিদের কক্ষের দৈর্ঘ্য ৪৯ দশমিক ৫০ ফুট ও প্রস্থ ২২ দশমিক ৫০ ফুট। মসজিদে পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজ পঁচটি ইসলামের ৫টি স্তম্ভের কথা চিন্তা করে এর ৫টি গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। চারপাশে চারটি ছোট গম্বুজ ও মাঝখানে একটি বড় গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। গম্বুজগুলি কোনো প্রকার রড ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের উত্তর পাশে ৪০ ফুট উঁচু মিনার রয়েছে।

এ মসজিদের দেয়ালে কাচ ও চিনামাটির টুকরো বসানো এবং মোজাইক করা। শুধু তাই নয় দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন রকমের নকশা ও কারুকাজ। এসব কারুকাজ অত্যন্ত সুক্ষ্ম, নিক্ষুত ও মনোরম। কাচ, চিনামাটি এবং মোজাইকের মাধ্যমে মসজিদের দেয়ালে মোগল স্থাপত্য শিল্পের অনুকরণে বিভিন্ন ধরনের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে।

মসজিদের পূর্ব পার্শ্বে রয়েছে হযরত শাহ সুলতান বখতির ৪ জন শিষ্যের মাজার। এদের মধ্যে দুটি মাজার হল শাহ্ কালামজী এবং শাহ্ এলেমজীর। সুদূর ঘোড়াশাল থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে এখানে এসেছিলেন তারা। তবে কোনো অজানা কারণে তাদের কবর দুটি সাধারণ কবরের চেয়ে বেশ লম্বা। মসজিদের আরেক প্রান্তে অবস্থিত মাজারে ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তির আসল নাম কেউ না জানলেও আল্লাহ্ ভক্ত এই মানুষটিকে সিফাত পাগলা বলেই স্থানীয়রা জানে।

মসজিদটি দেখতে এখানে প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুসল্লিরা আসে জুমআর নামাজ আদায় করতে। কোনো কোনো দিন এখানে প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।

অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য এই মসজিদটি স্থানীয় এবং বাহির থেকে আগত লোকজনের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হলেও সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ও অনুদান ছাড়াই শুধুমাত্র স্থানীয়দের সাহায্য ও দানে চলে এই মসজিদ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও অনুদান পেলে এই ঐহিত্যবাহী মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার ও সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like