Home জাতীয় আইকনিক বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার, দক্ষিণ এশিয়ার গর্ব

আইকনিক বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার, দক্ষিণ এশিয়ার গর্ব

by Amir Shohel

আধুনিক রাষ্ট্রগুলোতে সুউচ্চ ভবন এবং নান্দনিক স্থাপত্য সেসব দেশগুলোকে পরিচিত করে তোলে বিশ্বের বুকে। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। উন্নত দেশগুলোকে এবার চমক দেখাতে সুউচ্চ চমৎকার সব ভবন নির্মাণ করবে বাংলাদেশ। কোনো বানানো গল্প নয়। ঢাকার অদূরে পূর্বাচলেই ইতোমধ্যে এসব ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

পূর্বাচলের তিনশ ফিট। স্মার্ট সিটি গড়তে নানামুখি কাজ চলছে। সুবিস্তৃত রাস্তার পাশ ঘেষেই অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলছে। সবুজ আর পরিকল্পিত নগরীর প্রতিচ্ছবি যেন এটি। কোলাহল এবং যানজটহীন দুএকটি ব্যক্তিগত গাড়ি নির্মাণ গাড়ির সাথে ধুলার ওড়াওড়ি।

শেখ হাসিনা আর্ন্তজাতিক স্টেডিয়াম পার হয়ে কাঞ্চন ব্রিজ থেকে একনজরে দেখা যাচ্ছে পুরো শহর। সারি সারি ল্যাম্পপোস্ট আর সবুজের সমারোহ মুগ্ধতা ছড়ানো।

কাঁচাপাকা সড়কের পাশ জুড়েই এলিভেটেডেট ওয়ে উড়াল সড়ক ইউলুপ এমন অনেক কিছুই নির্মাণ চলছে। আমাদের গন্তব্য বাংলাদেশের গর্ব বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার। নিশ্চুপ এক নগরীতে আমাদের গাড়ি প্রবেশ করেছে।

বিশাল সাইনবোর্ডে নান্দনিক যত ভবনের নির্দেশনা। ৯৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে তিন আইকনিক ভবন গড়ে উঠবে। এছাড়া ৪০ তলার আরো ৪৯টি ভবন। এবছরেই ক্রয় করা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার নির্মাণ সামগ্রী।

দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিকদার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড ও জাপানের কিজমা করপোরেশন যৌথভাবে নির্মাণ করছে এটি। ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিতে ৫২ তলা ভবনটি ‘ল্যাঙ্গুয়েজ টাওয়ার’, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে ৭১ তলা বিশিষ্ট ভবন ‘লিবারেশন টাওয়ার’ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১১১ তলা বিশিষ্ট ভবনটি ’লিগ্যাসি টাওয়ার’ নামকরণে গড়ে উঠবে।

বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ারের আর্কিটেক্ট হিসেবে পৃথিবী বিখ্যাত এবং কোরিয়ার শ্রেষ্ঠ আর্কিটেক্ট প্রতিষ্ঠান হেরিম আর্কিটেক্ট কাজ করছে। বিশ্বের সর্বাধুনিক সোলার গ্লাসে তৈরি এ ভবনগুলো হবে পরিবেশবান্ধব।

ইতোমধ্যে ট্রাই টাওয়ার নির্মাণে ১১৪ একর জমির ওপর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অফিস নির্মাণ করছে। প্রয়োজনীয় ক্রেন, যন্ত্র নির্মাণ সামগ্রী এসেছে। প্রকল্পের মাটি পরীক্ষা, যানবাহন ব্যবস্থপনাসহ বিভিন্ন সমীক্ষার প্রতিবেদন এরইমধ্যে রাজউকে জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের খসড়া মাস্টার প্লান ও ডিজাইনও নির্ধারিত হয়েছে।

তিনটি সুউচ্চ টাওয়ারকে কেন্দ্র করে থাকছে নান্দনিক স্টেডিয়াম, হাসপাতাল, বিজনেস সেন্টার, আধুনিক ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি তৈরি হবে এখানে। শুরুতে ১৪২ তলা ভবন হওয়ার কথা থাকলেও এখন সর্বোচ্চ ১১১তলা ভবন হবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৪৭৩ ফুট উচু লিগ্যাসি টাওয়ার হলো বিশ্বের পঞ্চম সুউচ্চ ভবন। অন্যদিকে হংকংয়ের ১০৮ তলা ভবনে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের এই টাওয়ার হবে ১১২তম সুউচ্চ ভবন।

বহির্বিশ্বে পর্যটক দুবাই কিংবা মালয়েশিয়া যায় শুধু বুর্জ খলিফা কিংবা পেটরনাস টুইন টাওয়ারের সঙ্গে একটি ছবি তুলতে! যুগের পরে যুগ এ সব অবকাঠামোই একটি শহরের পরিচয় বহন করে এবং হয়ে ওঠে নান্দনিকতা ও আভিজাত্যের প্রতীক। এমন গৌরবের অধিকারী হবে এবার বাংলাদেশ।

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে প্রকল্পটি দৃশ্যমান হওয়া শুরু করবে এবং বর্তমানে প্রকল্পের পাইলিংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে এবং প্রকল্পটির তদারকির দায়িত্বে আছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী দেশগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ফিলিপাইন। এরইমধ্যেই প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয়ের ৬০ হাজার কোটি টাকা যোগাড় করা হয়েছে।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like